কক্সবাজার সংবাদদাতা : কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নে চিংড়ি ঘেরে ডাকাতির অভিযোগে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মহেশখালী পৌরমেয়র মকসুদ মিয়াসহ তার ৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।
রবিবার মহেশখালী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের হয়। আদালত মামলটি গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে।
মহেশখালী থানা পুলিশ সোমবার মামলাটি নথিভুক্ত করে বলে সত্যতা নিশ্চিত করে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ১৪ লাখ টাকার ঘোনা নামক চিংড়ি ঘেরে ১৯ অক্টোবর রাত ৯টায় মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়ার হুকুমে তার ৩০ সহযোগী দলবদ্ধ হয়ে চিংড়ি ঘেরে হানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ চিংড়ি, লবণ ও মূল্যবান মালামাল লুট করে এবং চিংড়ি ঘেরের পরিচালক ও কর্মচারীদের মারধর করে।
এ ঘটনায় চিংড়ি ঘেরের অংশীদার ও পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মহেশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
বাদীপক্ষের অ্যাডভোকেট হামিদুল হক জানান, আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্বাস উদ্দিন বাদীর আবেদন শুনে মহেশখালী থানার ওসিকে মামলা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হাই জানান, আদালতের নির্দেশে মহেশখালী পৌর মেয়র মকসুদ মিয়াসহ তার ৩০ সহযোগীর বিরুদ্ধে সোমবার রাতে ডাকাতির অভিযোগে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
মামলার আরজিতে মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন উল্লেখ করেন ঘটনার দিন ১৯ অক্টোবর রাত ৯টায় মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়ার নির্দেশে মিরাজ উদ্দিন নিশান (২২), মঈন উদ্দিন (৩০), শামশু উদ্দিন (২৮) আতা উল্লাহ বুখারী (৪৫) মোহাম্মদ মামুন (৪২), জাহাঙ্গীর (৪৫), হাসান মোরশেদ (২৫), বদি আলম (৩৫) মোহাম্মদ খোকন (২৫), মোহাম্মদ শান্ত (২৬), জসিম উদ্দিন (২৪), জাহাঙ্গীর আলম (২৮), অহিদুল্লাহ (২৪), নাছির উদ্দিন (৪৫), জিয়াউর রহমান (২৮), ফরিদ আলম প্রকাশ কালা ফরিদ (২৭), একরাম মিয়া (২৯), আলা উদ্দিন (৩৫), আজিজুল হক (৩০), আজিজুল হক (৩৫), সাইফুল হক (২৮), মজিবুর হক (২৬), রিফাত উদ্দিন ফুতাইয়া (২৯), তোফাইল উদ্দিন (২৪), আনোয়ার হোসেন (৩০), মোক্তার আহমদ (৩৫), আবছার (৩৫), লেদু (৩৫), মাহবুবুর রহমান (৩৫), গিট্যা মাহবুবসহ (২৮) আরো ১০/১৫ সন্ত্রাসী বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করতে করতে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। তারা চিংড়ি ঘের দখল/উচ্ছেদ করতে আগে থেকে আহরিত মাছ, জাল, মালামাল লুটপাট ও ডাকাতি করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা এ সময় চিংড়ি ঘেরের কর্মচারীদের কুপিয়ে ও গুলিতে আহত করে। পরে তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বাদী আরো উল্লেখ করেন, চিংড়ি ঘেরে লুণ্ঠনকারীরা ১৫ মণ চিংড়ি মাছ ও মাছ ধরার জাল অন্যান্য দেড় লাখ টাকার মালামাল লুট করে।
আমজাদ হোসেন জানায়, ঘটনার পর থেকে চিংড়ি ঘের লুটকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় মামলার এজাহার দায়ের করে। দায়ের করার পরে থানা কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের সহযোগিতা না পাওয়ায় পরবর্তীতে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়।
এ বিষয়ে জানতে মহেশখালী পৌরমেয়র মকসুদ মিয়াকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।