বিডি ঢাকা ডেস্ক
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, বর্তমানে দেশে কোনো সার সংকট নেই। এমনকি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত যে পরিমাণ সারের চাহিদা রয়েছে, তা মজুত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএ’র নদী থেকে সেচের পানি উত্তোলন প্রকল্প পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষি সচিব আরো বলেন— কিছু অসাধু লোক সারের কৃত্রিম সংকট বলে প্রচার করছে। তাদের কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন— অসচেতনতা ও অজ্ঞতার কারণে সারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে। তা রোধে কাজ করছে সরকার। তিনি বলেন— কৃষি মন্ত্রণালয়ের যে বাজেট তার ৭০ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে সারের ভর্তুকি হিসেবে। এতে বছরে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলায় ভূগর্ভস্থ পানির ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বিভিন্ন দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে এই অঞ্চলে কম পানি প্রয়োজন এমন ফসল চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়াও বৃষ্টির পানি আটকে রেখে ফসলে ব্যবহারের পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন করে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে বলে তিনি জানান।
কৃষি সচিব বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে বর্তমানে ব্যাপক ফসল উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। তাই দুটি দিকই বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন ফসল উৎপাদন স্বাভাবিক থাকবে, তেমনি ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার যেন করা না হয় সেদিকে সজাগ রয়েছে সরকার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের এই সচিব আরো বলেন— প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে কৃষিবান্ধব দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এর আগে তিনি মহানন্দা ও পুনর্ভবা নদীর মোহনা পরিদর্শনকালে স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকদের সাথে কথা বলেন। এসময় তিনি নদীর গতিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রকল্প পরিকল্পনার কথা জানান।
পরে কৃষি সচিব গোমস্তাপুর উপজেলা বিএমডিএ’র নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন ও কার্যালয় চত্বরে ফলদ গাছের চারা রোপণ করেন। বিকেলে উপজেলার রহনপুর ইউনিয়নের মচকৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ‘ডাবল লিফটিং পদ্ধতিতে মহানন্দা নদীর পানি সেচ কাজে ব্যবহার এবং পরিবেশ উন্নয়ন’ শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্পের উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন— বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মো. তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শামসুল হোদা, প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মো. আবুল কাসেম, প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এটিএম মাহফুজুর রহমান, মো. নাজিরুল ইসলাম, শিবির আহমেদ, সচিব নীলুফা সরকার, নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা খানমসহ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তরের অন্য কর্মকর্তারা।