মৌলভীবাজার সংবাদদাতা : মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার অফিস বাজারের ২২ বছর বয়সী এক ব্যবসায়ীকে পাওনা টাকা দেয়ার কথা বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আটকিয়ে কাজী ডেকে বিয়ে করেন দুই সন্তানের জননী ৪৬ বছর বয়সী এক বিধবা নারী।
পরে নানা কৌশলে ওই যুবকের ব্যবসার টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেন। অতঃপর দেন মোহরের টাকার জন্য এলাকাসহ থানা পুলিশে স্বামী জাবেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুলিশ দিয়ে সুবিধা করতে না পেরে অবশেষে মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে ৩ জনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করেছেন ওই নারী। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের সোয়ারারতল গ্রামের মৃত হারিছ আলীর ছেলে জাবের উদ্দিন (২২) স্থানীয় অফিস বাজারে মুদি দোকানদার। প্রায় ২ বছর আগে একই গ্রামের মৃত বশির উদ্দিনের স্ত্রী বিধবা হেনা বেগম (৪৬) মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া-আসার সুবাদে জাবের উদ্দিনের দোকানে যেতেন এবং গৃহস্থালি বিভিন্ন মালামাল কিনতেন। এক সময় হেনা বেগম বাকিতেও সদাই নিতে থাকেন। একপর্যায়ে বিধবা হেনা বেগমের নিকট জাবের উদ্দিনের ৬০ হাজার টাকা পাওনা হলে হেনা দোকানে যাতায়াত বন্ধ করে দেন। জাবের দীর্ঘদিন পাওনা টাকার তাগাদা দিতে থাকলে হেনা ও তার ভাইয়েরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
পরে হেনা এবং তার ভাইয়েরা মিলে পাওনা টাকা নিতে তাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বললে জাবের সে রাতে দোকান বন্ধ করে হেনা বেগমের বাড়িতে যায়। যাওয়া মাত্র ওঁৎ পেতে থাকা লোকজন হেনা বেগমের ঘরে ডুকে জাবেরকে আটকিয়ে রাতেই কাজী ডেকে ২ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন।
সাবেক ইউপি সদস্য নুর উদ্দিন ও ব্যবসায়ী বশির উদ্দিন জানান, ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল মাসে বিয়ে করার পর ব্যবসায়ী জাবের উদ্দিনের বাড়িতে হেনা বেগম এক মাস ঘর সংসার করেন। সেখানে গিয়ে একের পর এক জাবেরের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে দেন মোহরের জন্য হাঁটাহাঁটি করেন।
বড়লেখা থানায়ও জাবেরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। এখন জানতে পারি জাবেরসহ আরও দুজনকে আসামি করে মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী হেনা বেগম জানান, আমার ভাইদের পরিবারে আসার পরও জাবের এখানে এসে আমার ওপর নির্যাতন চালায়। আমার গর্ভে তার সন্তানও রয়েছে। মামলায় যা হয় তা হবে।
ভুক্তভোগী জাবের উদ্দিন জানান, আমি ওই নারীর ছেলের বয়সী। আমাকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে সে আমার সর্বস্ব লুটে নিয়েছে। এখন নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে, আমার মা ও ভাইদের ধ্বংস করে দিতে চাচ্ছে।