বরিশাল সংবাদদাতা : দু শ বছরের পুরোনো বরিশাল মহাশ্মশানে দুই দিনব্যাপী দীপাবলি উৎসব বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উৎসব পালিত হচ্ছে। এই উৎসবে স্বজনদের স্মরণ এবং আত্মার শান্তি কামনা, সমাধিতে মোমবাতি, ধূপকাঠি ও প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়। শ্মশানে দীপালি উৎসব পালনে কমিটির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সার্বিক প্রস্তুতি।
শ্মশান কমিটির তথ্যানুযায়ী, এ শ্মশানে কাঁচা-পাকা মিলিয়ে প্রায় ৬৫ হাজার সমাধি রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে প্রায় ৯শত সমাধি, যাদের স্বজনরা এ দেশে থাকেন না। সেসব সমাধিগুলোকে হলুদ রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সমাধিগুলোতে কমিটির উদ্যোগে দীপালি উৎসবের দিন সন্ধ্যায় মোমবাতি, ধূপকাঠি ও প্রদীপ প্রজ্বলন করা হবে।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার বলেন, দীপালি উৎসব এবারও অনাড়ম্বর পরিবেশে পালিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে শ্মশান এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বরিশাল মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সহসভাপতি গোপাল সাহা বলেন, দীপালির আয়োজনকে ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা প্রত্যেকে যে যার অবস্থান থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ৫ একর ৯৬ শতাংশের এ বরিশাল মহাশ্মশানে প্রতিবছর শ্মশান দীপালি উৎসবে লাখো মানুষের সমাগম হয়। কেউ দীপালির আয়োজন দেখতে আসেন আবার কেউ স্বজনদের সমাধিতে মোমবাতি, প্রদীপ প্রজ্বলন করেন, আবার কেউ মৃত স্বজনদের প্রিয় খাদ্য দিয়ে স্মরণ এবং আত্মার শান্তি কামনা করেন।
কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা সত্যামনন্দ দাশগুপ্ত, পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত, ব্রিটিশ বিরোধী নেতা বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, মনোরমা বসু মাসিমাসহ বহু খ্যাতিমান মানুষের সমাধি রয়েছে এ মহাশ্মশানে।