অনলাইন নিউজ : মাওয়া প্রান্তে টোল পরিশোধ করে প্রথম নারী বাইকার হিসেবে সকাল ৯টা ২৫ এর দিকে পদ্মা সেতু পাড়ি দেন ঢাকার রুবায়াত রুবা। সকাল ৬টায় জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু। সেতুর গেট খোলার আগেই শত শত বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল ও অ্যাম্বুলেন্সকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়া ঘিরে মানুষের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।
এরই মধ্যে পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়া প্রথম যানবাহন এবং চালকদের ব্যাপারে জানা গেছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ টোল দিয়ে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে আসা মোটরসাইকেল আরোহী আনোয়ার হোসেন (ঢাকা মেট্রো হ-৬০-৬০৩৯) প্রথম টোল প্লাজা পার হন। প্রথম ট্রাক—ঢাকা মেট্রো ট-১৮-৭২২২, প্রথম প্রাইভেটকার—ঢাকা মেট্রো গ-২৮-০৯৮৬ এবং প্রথম বাস—ঢাকা মেট্রো হ-১৫-৪৬২৪।
পেশায় ইউটিউবার রুবা মাওয়া প্রান্তে সেতুর টোল পরিশোধ করার পর বলেন, দেখতেই পাচ্ছেন আমি কী ভীষণ উত্তেজিত! পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়াদের প্রথম দিকের একজন হতে পেরে অনেক আনন্দ লাগছে।
রুবা বলেন, সেতু পার হওয়ার জন্য অপেক্ষারত যানবাহনের বিপুল চাপ থাকা সত্ত্বেও, বাইকারদের জন্য আলাদা টোল বুথ থাকায় সময় বেশি লাগেনি। এরপরেও কয়েকজন বাইকার নিয়ম ভেঙে অন্য বুথে গেছে।
পদ্মা সেতু ভ্রমণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে রুবা বলেন, মূলত সেতুটি দেখতে এবং নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলের জন্য সেতুর অভিজ্ঞতা রেকর্ড করতেই এসেছেন তিনি।
এদিকে, প্রথম দিন এমন একটি অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে পেরে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে চালক ও যাত্রীদের মধ্যে। অন্যদিকে, কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে—পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের যথাযথ প্রস্তুতি রয়েছে।
সেতু পার হওয়ার আগে চালকেরা স্বস্তি প্রকাশ করে বলছেন, ‘একটা বড় বিষয় যে, দালাল নেই। দালালের ঝামেলা একটা বড় ঝামেলা। এখন বড় কোনো জ্যামে বসে থাকা লাগছে না, সুন্দরমতো পার হতে পারছি।’
মোটরসাইকেলচালক এক যুবক পদ্মা সেতু পার হতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘পদ্মা সেতু দিয়ে পার হতে পেরে অনেক খুশি। আমরা যে এসেছি, এটা আমাদের কাছে কোনো জার্নি মনে হয়নি, এটা একটা স্বপ্ন ছিল। এটা ভাষা দিয়ে বর্ণনা করা যাবে না। যারা আসছে, তারাই বুঝতে পারবে।’
পদ্মা সেতুর কর্মীরা বলছেন, ‘আমরা সকাল ৬টা থেকে কাজ শুরু করেছি। সেতু উন্মুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত অনেক যানজট ছিল। কিন্তু, আমরা সামলে নিয়েছি। এখন সব আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং সবাই অনেক খুশি। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করছে।’
সরকারের নির্ধারণ করা টোল হার অনুযায়ী, ছোট বাসে এক হাজার ৪০০ টাকা, মাঝারি বাসে দুই হাজার টাকা এবং বড় বাসে দুই হাজার ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে। ছোট ট্রাকের টোল এক হাজার ৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে দুই হাজার ১০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা, বড় ট্রাকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা। পিকআপের টোল এক হাজার ২০০ টাকা। কার ও জিপের টোল ধরা হয়েছে ৭৫০ টাকা, মাইক্রোবাসে এক হাজার ৩০০ টাকা এছাড়া মোটরসাইকেলে ১০০ টাকা।
এর আগে শনিবার পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে যুগান্তকারী সাফল্য।
এ জাতীয় আরো খবর..