তানোর( রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোর পাক হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের উদ্যোগে র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা গেছে, ১৩ ডিসেম্বর রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতোর সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ প্রতিনিধি ও উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না। অন্যান্যদের মধ্য আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান আবু বাক্কার, তানোর থানার অফিসার ইন্চার্জ ওসি রাকিবুল হাসান ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল ওহাব শেখ প্রমুখ। সভায় বক্তাগণ বলেন, আজ ১৩ ডিসেম্বর তানোর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে রাজশাহীর তানোরকে পাক হানাদার ও রাজাকামুক্ত ঘোষণা করা হয়। ৭১ সালের ১৪ এপ্রিল উপজেলার কামারগাঁ মহারাজার কাচারি বাড়ির সামনে পাকিস্তানি পতাকায় আগুন দেয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। খবরটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে পাকিস্তানি সেনারা এলাকায় খুঁঁজতে থাকে মুক্তিযোদ্ধাদের। এদিকে তানোর থানার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল ওহাব শেখ বলেন, সেই সময়ে তারা মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিতে ভারতের শিলিগুড়িতে যান। সেখান থেকে ট্রেনিং শেষে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা দল রাতের অন্ধকারে ১৪ আগস্ট তানোর থানার বাতাসপুর রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করি। এর ১৫ দিন পর একইভাবে কামারগাঁ রাজাকার ক্যাম্প ও তালন্দ জমিদার বাড়ির ক্যাম্প আক্রমণ করি। তিনি আরো বলেন, এ সময় রাজাকাররা বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ মানুষদের ধরে কামারগাঁ দোলায়পুকুর ও তালন্দ তাতাল কুড়ীর মধ্যে গুলি করে মেরে পুঁতে রাখতো। দুই-এক দিন পর পর পাকবাহিনী ও রাজাকারদের ওপর আমরা হামলা চালাতাম। যুদ্ধ শেষ পর্যায়ে পৌঁছালে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা পালিয়ে রাজশাহী শহরে চলে যায়। ফলে ১৩ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী ও রাজাকারমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয় তানোরকে। সেই দিন কামারগাঁ মহারাজার কাচারি বাড়ি, তালন্দ জমিদার বাড়ির সামনে ও তানোর সদরে বাংলাদেশের মানচিত্র অঙ্কিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। আর সেই থেকে ১৩ ডিসেম্বর তানোর মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এদিকে, উপজেলার একাধিক মুক্তিযোদ্ধা দুঃখ করে বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৬ বছর পরেও উপজেলার কামারগাঁ দোলায়পুকুর ও তালন্দ তাতাল কুড়ীর বৈধ্যভূমি দুটি অযত্ন-অবহেলায় গোচরণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। তাই দ্রুত বৈধ্যভূমি দু’টির সংস্কারের জন্য তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।এদিকে এর আগে একটি রালী উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর থেকে বের হয় এবং প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে গিয়ে শেষ হয়।