শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন

সাংবাদিকতা ছেড়ে এখন একজন সফল ব্যবসায়ীর গল্প

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১
  • ৩৮১ বার পঠিত
সাংবাদিকতা ছেড়ে এখন একজন সফল ব্যবসায়ীর গল্প
ফটো : ইন্টারনেট থেকে

অনলাইন নিউজ : ২৬ বছর আগে চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করা এস এম খালেদ এখন একজন সফল ব্যবসায়ী। গড়ে তুলেছেন স্নোটেক্স গ্রুপ। রপ্তানির পাশাপাশি স্থানীয় বাজারের জন্য গড়েছেন ‘সারা লাইফস্টাইল’ নামের পোশাকের খুচরা বিক্রির ব্র্যান্ড। সাংবাদিকতা ছেড়ে ২ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি মোটরসাইকেল নিয়ে এখানে-সেখানে ছুটে বেড়াতেন। সংবাদ সংগ্রহে। দেশসেরা রাজনীতিবিদদের সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন পেশাগত কাজে। সেসব সাক্ষাৎকার ও বিভিন্ন সংবাদ ছাপা হয় জাতীয় এক ইংরেজি পাক্ষিকে। বেতন ছিল মাসে দেড় হাজার টাকা। এই টাকার পুরোটাই আবার মোটরসাইকেলের জ্বালানি আর রক্ষণাবেক্ষণেই শেষ।

সাংবাদিকতা ছেড়ে দিয়ে দুই বছরের কম সময়ে আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। চাকরির ফাঁকে ফাঁকে বন্ধুদের সঙ্গে ব্যবসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। চাকরি, বন্ধুদের সঙ্গে ব্যবসা—কোথাও যখন সফলতার দেখা মিলছিল না, তখন একপর্যায়ে শূন্য হাতে একাই নেমে পড়েন ব্যবসায়। পুঁজি বলতে একটি কম্পিউটার, একজন কর্মী আর জমানো সামান্য কিছু অর্থ। শুরুতে নিজের বাসাকেই বানালেন ব্যবসায়িক কার্যালয়। সেই ব্যবসায়ী এস এম খালেদ রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের সামনের সারির একজন উদ্যোক্তা। ২৬ বছর আগে দেড় হাজার টাকা বেতনের সাংবাদিকতা ছেড়ে আসা এস এম খালেদ এখন একজন সফল ব্যবসায়ী। রপ্তানির পাশাপাশি স্থানীয় বাজারের জন্য গড়ে তুলেছেন ‘সারা লাইফস্টাইল’ নামের পোশাকের খুচরা বিক্রির ব্র্যান্ড।

সাংবাদিকতা ছেড়ে ২ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা তাঁর
একনজরে স্নোটেক্স গ্রুপ
প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৯৮
কারখানা ৪টি
কর্মীর সংখ্যা ১৬,০০০
বার্ষিক রপ্তানি
২৫ কোটি মার্কিন ডলার
সহযোগী দেশীয় ব্র্যান্ড
সারা লাইফস্টাইল
এস এম খালেদের গড়ে তোলা স্নোটেক্স গ্রুপের চারটি পোশাক কারখানায় বর্তমানে কাজ করেন প্রায় ১৬ হাজার কর্মী। বছরে তাঁর প্রতিষ্ঠানের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ২৫ কোটি ডলার বা ২ হাজার ১২৫ কোটি টাকা।

সংবাদকর্মী থেকে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনের গল্প জানতে গত বুধবার স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদের সঙ্গে  দীর্ঘ আলাপ হয়। মিরপুরে স্নোটেক্সের করপোরেট কার্যালয়ে যখন ব্যবসায়ী খালেদ তাঁর ফেলে আসা দিনের কথা শুরু করলেন, বাইরে তখন ঝুম বৃষ্টি। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে এগিয়ে চলে আলাপ। একে একে নিজের ছেলেবেলা, সাংবাদিকতা, চাকরির জন্য দৌড়ঝাঁপ, প্রথম ব্যবসায় ব্যর্থতার পর অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে পুনরায় ব্যবসা শুরু, প্রথম ক্রয়াদেশ, নিজের পরিবার, অবসর ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বললেন এস এম খালেদ।

এস এম খালেদ বললেন, ‘অনেক টাকা উপার্জন করতে হবে, তেমনটি ভেবে কখনোই কিছু করিনি। তবে ব্যবসার প্রতিটি জায়গায় প্রথম দিন থেকে সততা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করেছি। তা ছাড়া নিজের আনন্দের জন্য কাজ করাকে গুরুত্ব দিয়েছি সব সময়। আমি বিশ্বাস করি, নিজে সুখী হলে অন্যকে সুখী করা সম্ভব। তাই আমার প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য হচ্ছে, সুখী হই, সুখী করি।’

শুরুর সংগ্রামের গল্প
বাবা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ছিলেন। সেই সুবাদে এস এম খালেদের ছোটবেলা কেটেছে ঢাকার মিরপুরে। কিশোর বয়স থেকে সংগঠনপাগল এই মানুষ ধূমপানের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে ‘অ্যান্টিস্মোকিং ক্যাম্পেইন অ্যাসোসিয়েশন (আধুনিক)’-এর পক্ষে সাত বন্ধুকে নিয়ে ঢাকা থেকে ২৬৪ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হন।

স্নাতকোত্তর পড়ার সময় ১৯৯৪ সালে সংগঠনের এক বড় ভাইয়ের প্রস্তাবে দি নেশন টুডে নামের নতুন ইংরেজি পাক্ষিকে যোগ দেন এস এম খালেদ। বেশ আগ্রহ নিয়েই এক বছর সাংবাদিকতা করেন। এই সময়ে আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদের মতো বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের সাক্ষাৎকার নেন। বললেন, ‘সংবাদপত্রে কাজ করাটা আমাদের জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা। অনেক অনেক কিছু শিখেছি। সে সময় সচিবালয়ে কোথায় কোন মন্ত্রী বসতেন, সেসব ছিল আমার মুখস্থ।’

সাংবাদিকতা ছাড়ার পর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একটি প্রকল্পে আড়াই হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন এস এম খালেদ। কয়েক মাস করার পর সংসারের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য নতুন চাকরি খুঁজতে থাকেন। একদিন হঠাৎ কী খেয়াল হলো, বাসার পাশের দোকান থেকে ২৫টি খাম কিনলেন। ছবিও প্রিন্ট করে আনলেন। জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করে রাখলেন। টানা ১৭ দিন সকালে দৈনিক ইত্তেফাক ও অবজারভার পত্রিকা দেখে তাৎক্ষণিকভাবে আবেদনপত্র লিখে তা নিজে জমা দিয়ে আসতেন।

সাংবাদিকতা ছেড়ে ২ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা তাঁর
চাকরির সাক্ষাৎকারও দিতে লাগলেন। ১৭ দিনের দিনের মাথায় প্রথম চাকরি হলো একটি বায়িং হাউসে। ভারতীয় কোম্পানি। পদ ট্রেইনি মার্চেন্ডাইজার। বেতন ৫ হাজার টাকা। তবে বায়িং হাউসটিতে কাজ করে খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত চাকরিই ছেড়ে দিলেন এস এম খালেদ।

তারপর এস এম খালেদ একটি কার্টন কারখানায় চাকরির জন্য চেষ্টা করলেন। বেতন আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি যোগদান চূড়ান্ত করতে সময় নিচ্ছিল। এই ফাঁকে আরেকটি পোশাক কারখানায় মার্চেন্ডাইজার হিসেবে চাকরি পেয়ে যান খালেদ। এবারও বেতন ৫ হাজার টাকা। খালেদ বললেন, ‘পোশাক কারখানায় কাজ করার সময়ই আমি ভাবতে লাগলাম, কবে আমি নিজে কিছু শুরু করব। সে জন্য পোশাক কারখানার কাজগুলো ভালোভাবে শেখার চেষ্টা করতাম।’

১৯৯৭ সালে পাঁচজন বন্ধু মিলে লেবেল তৈরির কারখানা গড়ার উদ্যোগ নেন। বনানীতে অফিস। কিন্তু তিন মাস না যেতেই বুঝে ফেলেন সময় নষ্ট হচ্ছে। তখনো উৎপাদন শুরু হয়নি। সেখান থেকে বের হয়ে আবার এক বন্ধুকে নিয়ে পোশাক খাতের সরঞ্জাম (এক্সেসরিজ) উৎপাদনের কারখানার চেষ্টা করেন। সেটিও সফল হয়নি। তারপর নিজেই সরঞ্জামের ব্যবসা করবেন বলে মনস্থির করলেন। বাসায় কার্যালয় করলেন। একটা কম্পিউটার কিনলেন। নিয়োগ দিলেন একজন কর্মী। এভাবেই যাত্রা শুরু ‘স্নোটেক্সের’।

কথায় কথায় এস এম খালেদ বলেন, একেবারে পুঁজি ছাড়াই ব্যবসা শুরু করেছিলাম। বায়িং হাউস ও পোশাক কারখানায় কাজ করায় কিছু অভিজ্ঞতা ছিল। কিছু লোকজনকেও চিনতাম। তারপরও টানা তিন সপ্তাহ কোনো অর্ডার (ক্রয়াদেশ) পাইনি। একদিন পরিচিত একজন খবর দিল, ওই কারখানায় যাও। তাদের ২ হাজার পিস লেবেল লাগবে। ক্রয়াদেশের আশায় তখনই ছুটলাম। ক্রয়াদেশটা পেলাম। দিন-রাত খেটে পরের দিনই লেবেল তৈরি করে সরবরাহ করলাম।

পোশাকের ব্যবসায় হাতেখড়ি
পোশাকের সরঞ্জামের ব্যবসা বাড়তে লাগল। ছয় মাসের মধ্যে বেশ কিছু অর্থ চলে আসে খালেদের হাতে। অংশীদারি ব্যবসায় শেষ চেষ্টা হিসেবে দুই বন্ধুকে নিয়ে পোশাক খাতের লেবেল উৎপাদনের কারখানা করার উদ্যোগ নিলেন। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বায়িং হাউস থেকে কমিশনভিত্তিক কাজ করার সুযোগ পান খালেদ। এই ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় লেবেল উৎপাদনের কারখানা আর আলোর মুখ দেখেনি। অন্যদিকে বায়িং হাউসের প্রথম দিকে কয়েকটি ক্রয়াদেশ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি খালেদ। তবে হাল ছাড়েননি।

স্নোটেক্সের এই কর্ণধার বললেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বার্ন অ্যাপারেলস কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা ঢাকায় এসেছিলেন। খবর পেয়ে আমি মিরপুর থেকে স্কুটারে করে সোনারগাঁও হোটেলে গেলাম। প্রথমে পাত্তা পেলাম না। কয়েক মাস পর তাঁরা আবার এলেন ঢাকায়। আমি গেলাম। শেষ পর্যন্ত ৫ হাজার পিস জ্যাকেটের ক্রয়াদেশ পেলাম। ২০০১ সালের পাওয়া সেই ক্রয়াদেশের পোশাক সফলভাবে প্রস্তুত করে নির্ধারিত সময়ে সরবরাহ করার পর প্রতিবছরই ক্রয়াদেশ বাড়াতে থাকে বার্ন।

সাংবাদিকতা ছেড়ে ২ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা তাঁর
বার্নের কাজ পাওয়াটা ব্যবসায়িক জীবনের বড় টার্নিং পয়েন্ট বলে মনে করেন এস এম খালেদ। কারণ, তাদের সহযোগিতাতেই ২০০৫ সালে মিরপুরে প্রথম কারখানা স্থাপন করেন। ৮০০ জনের কর্মসংস্থান হয়। এর আগে কর্মী ছিলেন ৮-৯ জন। বার্ন আগে চারটি কারখানা থেকে পোশাক প্রস্তুত করত। বর্তমানে তাদের সব কাজই করে স্নোটেক্স। বার্নের সহযোগিতায় ২০০৯ সালে মালিবাগে আরেকটি কারখানা করেন। সেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে ১ হাজার ২০০ কর্মীর। আবার বার্নের কর্তাব্যক্তিদের কল্যাণেই দ্বিতীয় আরেকটি ব্র্যান্ডের কাজ পান খালেদ। রিচলু নামের সেই ব্র্যান্ডের বড় সরবরাহকারী হয়ে ওঠে স্নোটেক্স।

তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ধামরাইয়ে ৬০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন পরিবেশবান্ধব দুটি পোশাক কারখানা। স্নোটেক্স আউটারওয়্যার নামের প্রথম কারখানা উৎপাদনে যায় ২০১২ সালে। ৮ হাজার শ্রমিক কাজ করেন সেখানে। আর স্নোটেক্স স্পোর্টসওয়্যার নামের দ্বিতীয় কারখানাটি যাত্রা শুরু করে বছর দুয়েক আগে। সব মিলিয়ে কারখানা দুটিতে কাজ করেন ১৪ হাজার শ্রমিক।

বর্তমানে স্নোটেক্স গ্রুপ বার্ন, রিচলু ছাড়াও ১৩টি ব্র্যান্ডের জ্যাকেট, খেলার পোশাক, শ্রমিকদের পোশাক, নিরাপত্তামূলক পোশাক, ডেনিম, টুইল প্যান্ট ইত্যাদি প্রস্তুত করে। করোনার সময়ে গত দেড় বছরে ক্রয়াদেশ থাকায় নতুন করে আড়াই হাজার শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছে খালেদের গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠান।

মুনাফার ভাগ পান শ্রমিকেরা
শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রেও অন্যদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে স্নোটেক্স। তিন বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক-কর্মচারীরা দক্ষতার বোনাস নামে মুনাফার ভাগ পাচ্ছেন। প্রথম দিকে মুনাফার ১০ শতাংশ দেওয়া হলেও বর্তমানে সেটি বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। তাতে শ্রমিকেরা সপ্তাহে গড়ে ২০০ অর্থাৎ মাসে ৮০০ টাকা বাড়তি পাচ্ছেন। প্রতি সপ্তাহে এই টাকা পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানটি।

অন্যদিকে ধামরাইয়ে কারখানার প্রথম দিন থেকে দুপুরে শ্রমিকদের বিনা মূল্যে খাবার সরবরাহ করছে স্নোটেক্স। বর্তমানে শ্রমিকসংখ্যা ১৪ হাজারে গিয়ে ঠেকলেও সেটি চলমান রয়েছে। কারখানার ভেতরেই শ্রমিকদের জন্য প্রতিদিন রান্না হয়। সেই খাবারই শ্রমিক, কর্মকর্তা ও মালিকপক্ষের লোকজন একসঙ্গে খেয়ে থাকেন।

অন্য কারখানার শ্রমিকেরা যেখানে এক মাসের মজুরি পরের মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পান, সেখানে স্নোটেক্সের কর্মীরা মাসের মজুরি মাসেই পান। তবে গত বছর সরকারের প্রণোদনা তহবিল থেকে মজুরি দেওয়ার সময় প্রক্রিয়াগত কারণে তিন মাস কিছুটা বিলম্ব হয়েছিল। স্নোটেক্সের ইতিহাসে বেতন দেরিতে দেওয়ার ঘটনা সেটিই প্রথম বলে জানালেন এস এম খালেদ।

দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিশেষ নজর
নতুন নতুন উদ্যোগে জড়ানোর চেয়ে চলমান ব্যবসাকে টেকসই করতে বেশি জোর দিচ্ছেন এস এম খালেদ। দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি উৎপাদন ব্যবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং টুলস, লিন ম্যানেজমেন্ট ও ডিজিটাল ব্যবস্থা সংযোজনে নজর দিচ্ছেন। পাশাপাশি সংযোগশিল্পেও বিনিয়োগের চিন্তাভাবনা চলছে।

স্নোটেক্সের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, ব্যবসা এমনভাবে করব যেন ক্রেতারা সুবিধা পায়। আর যাঁরা কাজটি করেন, তাঁরাও যেন সুবিধা পান।’ বললেন, ‘আমি আমার কাজটি ঠিকঠাক করার চেষ্টা করছি। ব্যবসা আপনাআপনি বড় হচ্ছে।’

অবসর কাটে যেমন
স্ত্রী শরিফুন নেসা আর দুই সন্তান সারাফ সাইয়ারা ও রাফান নাসমীকে নিয়ে এস এম খালেদের সংসার। সপ্তাহের ছয় দিন কাজ করলেও শুক্রবার তাঁর জন্য ফ্যামিলি ডে। সেদিন অতি জরুরি না হলে অফিসের কোনো কাজ করেন না। ব্যবসা নিয়ে কথাবার্তাও না। মাঝেমধ্যেই বন্ধুদের সঙ্গে লম্বা আড্ডায় ডুবে যান।

এস এম খালেদ বলেন, ‘অবসরে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাই। বছরে দুবার বাচ্চাদের নিয়ে দেশের বাইরে ঘুরতে যাই। দেশের ভেতরেও ঘুরতে যাওয়া হয়। ছোটবেলা থেকেই ঘোরাঘুরি খুব পছন্দের। করোনার আগে প্রতি সপ্তাহে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হতো। তাঁদের সঙ্গে এখনো বাচ্চাকালের মতো দুষ্টুমি করতে পছন্দ করি।’

স্নোটেক্সের কার্যালয় থেকে যখন বের হলাম, তখন বৃষ্টি নেই। আকাশে ঝকঝকে রোদ। তবে ফুটপাত ভেজা। হাঁটতে হাঁটতে এস এম খালেদের একটি কথা মনে পড়ছিল বারবার, নিজের আনন্দের জন্য কাজ করাকে গুরুত্ব দিয়েছি সব সময়। আমি বিশ্বাস করি, নিজে সুখী হলে অন্যকে সুখী করা সম্ভব…।

তরুণদের জন্য এস এম খালেদের পরামর্শ
মানুষ যেটি করতে চায় সেটিই করতে পারে। সে জন্য ইচ্ছাটা থাকতে হবে। আর কাজ করতে হবে। আমার ব্যবসার জন্য পুঁজি দরকার হয়নি। ধীরে ধীরে সেই পুঁজি এসেছে।

অনেকেই হুট করে বিনিয়োগ করে বিপদে পড়ে যান। আমার মনে হয়, প্রথমেই বিনিয়োগ করা উচিত নয়। ব্যবসা করতে হলে সেই ব্যবসাটা আগে জানতে হবে। বুঝতে হবে। আবারও বলি, ব্যবসার জন্য অভিজ্ঞতা ও নিজের ইচ্ছাটা গুরুত্বপূর্ণ। আরেকটি কথা মনে রাখতে হবে, ব্যবসার শুরুটা সব সময়ই কঠিন হয়।

আমি প্রথম যখন সরঞ্জামের ব্যবসায় নামলাম, তখন মুনাফার দিকে তাকাইনি। আমি আমার কাজটা সঠিকভাবে করার চেষ্টা করেছি। সময়মতো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে সঠিক সময়ে অর্থ পরিশোধ করেছি। আমি বিশ্বাস করি, আমার কাজই আমাকে ব্যবসা দ্বিগুণ করে দেবে। সেই প্রমাণ আমি বারবার পেয়েছি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com