হোটেলরুমে এক নারীকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে আলিবাবার এক ম্যানেজারকে বরখাস্ত করা হবে। এ বিষয়ে চীনের প্রযুক্তি বিষয়ক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান কর্মীদের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
চিঠিতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডানিয়েল ঝাং বলেছেন, দু’জন বস এ অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়ে পদত্যাগ করেছেন।
অভিযোগ আছে, এক রাতে হোটেলে মদ্যপ অবস্থায় অচেতন ছিলেন এক নারীকর্মী। তাকে হোটেলকক্ষে এই সুযোগে এক পুরুষ ‘বস’ ধর্ষণ করেছেন। এ অভিযোগে পুলিশের সঙ্গে কাজ করছে আলিবাবা। চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে ওই নির্যাতিত নারীকর্মীর অভিযোগ।
ডানিয়েল ঝাং বলেছেন, অভিযুক্ত ম্যানেজার ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, যখন ওই নারী ‘মাতাল’ অবস্থায় ছিলেন, তখন তার সঙ্গে তিনি অন্তরঙ্গ সম্পর্কে মিলিত হয়েছেন।
ডানিয়েল ঝাংয়ের ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ওই ম্যানেজারকে বরখাস্ত করা হবে। তাকে আবার নতুন করে নিয়োগ দেয়া হবে না। তিনি ধর্ষণ করুন বা অনৈতিক কাজ করুন- যা-ই করুন না কেন, তাতে আইন লঙ্ঘন করেছে কিনা তা নির্ধারণ করবে আইন প্রয়োগকারীরা। চিঠিতে আরও বলা হয়, ওই নির্যাতিত নারীর মঙ্গলের দায়দায়িত্ব নেবে আলিবাবা। এতে বলা হয়, ‘আমরা যতদূর পারি তার দেখাশোনার সবকিছু করবো’।
পূর্বাঞ্চলীয় জিনান শহরে ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রোববার সেখানকার পুলিশ বলেছে, তারা এরই মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করছে। ধর্ষিত ওই নারীর ধর্ষণ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রকাশ করা হয়েছে চীনে টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগ বিষয়ক ওয়েবসাইট উইবোতে। এতে দেখা যায়, ওই নারীর অভিযোগ মোট ১১ পৃষ্ঠার।
এতে তিনি বলেছেন, ম্যানেজার তাকে একজন ক্লায়েন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য জোর করে জিনান শহর সফরে নিয়ে যান। আলিবাবা’র প্রধান কার্যালয় হ্যাংঝৌতে। সেখান থেকে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরে এই জিনান শহর। কিন্তু সহকর্মীদের সঙ্গে নৈশভোজের পর তাদেরকে এলকোহল দেয়ার নির্দেশ দেন সঙ্গীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ওই নারীকর্মী অভিযোগ করেন, ২৭ জুলাই রাতে তাদের ক্লায়েন্ট তাকে চুম্বন করে। এরপর তার যখন চেতনা ফেরে তিনি দেখতে পান সেটা পরদিন সকাল। হোটেলকক্ষে নিজেকে আবিষ্কার করেন বিবস্ত্র অবস্থায়। এ সময় রাতে কি ঘটেছে তা স্মরণ করতে পারেননি তিনি। এ অবস্থায় তিনি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করেন। তাতে তিনি দেখতে পান, ম্যানেজার ওই রাতে চারবার তার রুমে প্রবেশ করেছেন। চিঠিতে আলিবাবা বলেছে, জোর করে কাউকে নেশা পান করানোর কঠোর বিরোধী তারা।
নির্যাতিত নারী হ্যাংঝৌতে প্রধান কার্যালয়ে ফেরার পর ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেন আলিবাবা’র মানবসম্পদ বিভাগ এবং সিনিয়র ম্যানেজারকে। এতে তিনি ওই ম্যানেজারকে বরখাস্ত করার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, অভিযোগ শোনার পর প্রাথমিকভাবে তার অনুরোধ রাখতে রাজি হয় মানবসম্পদ বিভাগ। কিন্তু পরে তারা কোনোই ব্যবস্থা নেয়নি। কর্মীদের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, পুরো ঘটনা যেভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে, তাতে মানবসম্পদ বিভাগ যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দেখভাল করেনি।