সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে সব পক্ষেরই সচেতনতা দরকার : আলোচনা সভায় অভিমত ক্ষতিপূরণ দাবি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ ৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল ঢাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পল্লী বিদ্যুতের ৭ জন বরখাস্ত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের কর্মসূচি স্থগিত ন্যাশনাল মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজে হামলা- ভাঙচুর, পরীক্ষা স্থগিত বরাদ্দের মধ্যেই দিবস পালন করতে হবে : জেলা প্রশাসক চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় আবদুল ওয়াহেদ নেতৃত্বাধীন প্যানেলের

চার মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর প্রাণ ফিরেছে কক্সবাজারে, ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২১
  • ৩২৭ বার পঠিত

কক্সবাজার সংবাদদাতা : করোনা মহামারির কারণে সাড়ে চার মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত ১৯ আগস্ট থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। দীর্ঘদিন পর প্রাণ ফিরে পেয়েছে পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজার। সৈকতের শহর এখন পর্যটকে ঠাসা। উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে শঙ্কা থাকলেও আশায় বুক বাঁধছেন স্থানীয়রা। পর্যটনের ওপর নির্ভর করে যারা নানাভাবে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা বিগত দিনের ক্ষতি পোষানোর স্বপ্নে বিভোর। আর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ না হলে আগামী কয়েক মাসে ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকতের লাবণী, কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্ট হাজার হাজার পর্যটকে ঠাসা। তারা বালিয়াড়িসহ সাগরের নোনাপানিতে আনন্দে মেতেছেন। কেউ ছবি তুলছেন, আবার কেউ সেলফিতে মেতে উঠেছেন। কেউ সমুদ্রের ঢেউয়ে পা ভেজাচ্ছেন, কেউবা সি-বেঞ্চে বসে আছেন আরাম করে। পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন অনেকে।

কক্সবাজারের হোটেল, কটেজ ও রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন এলাকার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় বেড়েছে। সৈকতের পাশাপাশি হিমছড়ি, ইনানী, সাবরাং এক্সক্লুসিভ জোন, বার্মিজ মার্কেট, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ অন্য স্পটগুলোতেও পর্যটকরা আসছে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় সেন্টমার্টিন যাওয়ার কোনো তোড়জোড় নেই। অক্টোবর মাসের শেষের দিকে সব ঠিকঠাক থাকলে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল ও পর্যটন ব্যবসা শুরু হবে।

করোনার কারণে প্রায় সাড়ে চার মাস পর ১৯ আগস্ট কক্সবাজারের পর্যটক কেন্দ্রগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে বাড়তে থাকে পর্যটকের আনাগোনা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো উপচেপড়া ভিড় থাকে সাগর তীরে।

পর্যটকের ওপর নির্ভরশীল সৈকতের ফটোগ্রাফার, জেড স্ক্রি চালক ও হকার- দীর্ঘদিন পর হলেও সৈকতে পর্যটক বাড়ায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে তাদের মধ্যে।

সৈকতে পর্যটকের চাপ বাড়ায় তিনটি পয়েন্টে টহল ও টাওয়ার বসিয়ে সমুদ্র স্নানে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লাইফ গার্ড কর্মীরা।

এদিকে সৈকতে ঘুরে বেড়ানো পর্যটকরা বলছেন, করোনা মহামারিতে ঘরবন্দি থাকতে আর ভালো লাগছে না। অনেকে বিষন্ন। তাই একটু বিনোদনের জন্য সৈকত ভ্রমণে এসেছেন। বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কক্সবাজারে ছুটে এসেছেন অনেকেই।

ঢাকার মিরপুর থেকে সপরিবারে আসা আবদুল হক খান বলেন, ‘অনেক দিন কক্সবাজারে আসব আসব বলে আসা হয়নি। করোনা পরিস্থিতির কারণে সবকিছু বন্ধ ছিল। অবশেষে সৈকত খুলে দেওয়ার খবর শুনে ছেলে-মেয়েদের একটু ভ্রমণে আনলাম। অনেক দিন পর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মুখ দেখে তারা অনেক খুশি। বলতে গেলে আমার ছেলে-মেয়েরা বিচ থেকে উঠতে চাচ্ছে না।’

কক্সবাজার কলাতলী আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা জামাল সাদেক বলেন, ‘সমুদ্র সৈকত বাড়ির পাশে হলেও করোনার কারণে অনেক দিন আসা হয় না পরিবার নিয়ে। ঘরে থাকতে থাকতে আর ভালো লাগছিল না। তাই বাচ্চা ও স্ত্রীকে নিয়ে সৈকতে ঘুরতে বের হলাম।’

লাবণী পয়েন্টে কথা হয় ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ রফিকের সাথে। তিনি বলেন, ‘এতদিন অনেক কষ্টে ছিলাম। এখন অনেক ভালো লাগছে, প্রতিদিন এক থেকে দুই হাজার টাকা আয় হয়।’

কলাতলী দ্য গ্র্যান্ড স্যান্ডি হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রহমান  বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আবারও বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে সৈকতে পর্যটকের উপচেপড়া ভিড়। আমাদের হোটেলে এখন ভালো বুকিং হচ্ছে।

ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, সমুদ্র সৈকত খুলে দেওয়ার পর থেকে আশুরা ও আজ (শুক্রবার) অনেক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। এ কারণে অনেক হোটেলে আগে থেকে অগ্রিম বুকিং হয়েছে। তবে কেউ যেন ৫০ শতাংশের বেশি কক্ষ ভাড়া না দেন, সে ব্যাপারে তদারকি হচ্ছে।’

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, ‘করোনায় স্থবিরতা এসেছে পর্যটন খাতের ব্যবসায়। গত পাঁচ মাসে এ খাতে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে আনতে অনেক সময় লাগবে। এখন অনেকটা পর্যটন ব্যবসা হচ্ছে এভাবে চালু থাকলে পর্যটননির্ভর হোটেলসহ কর্মকর্তা কর্মচারীরা লাভবান হবেন।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকদের সব সেবা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করা হচ্ছে। পর্যটন স্পটের সব মুখে বিচ কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সমন্বয়ে মাস্ক ব্যবহার করতে মাইকিং করা হচ্ছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যদের কয়েকটি টিম পর্যটন এলাকায় টহলে রয়েছে। সৈকতে পুলিশ বক্স থেকে সবসময় মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com