“লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক” ধ্বনি ও কাবা প্রদক্ষিণের মাধ্যমে দুদিন আগেই সৌদি আরবে শুরু হয়েছে মুসলমানদের পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। আজ মঙ্গলবার (২৭ জুন) সৌদি আরবের মক্কা নগরীর ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। বিশ্বের নানা প্রান্তের লাখ লাখ মুসলমান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন মক্কায়। “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক” ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে পবিত্র আরাফাতের ময়দান।
মঙ্গলবার আরাফাত দিবসে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ নামিরা থেকে হজের খুতবা ও নামাজ আদায়ের মধ্যদিয়ে পালিত হবে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। আরাফাতে এ দিনের আনুষ্ঠানিকতাকে মূল হজ বলা হয়।রবিবার মিনা থেকেই মূলত হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। হজের অংশ হিসেবে মুসল্লিরা মিনা, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা, মক্কায় পাঁচদিন অবস্থান করবেন।করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে এ বছর রেকর্ড সংখ্যক মুসল্লি পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবে জড়ো হয়েছেন। এ বছর ২৫ লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “এ বছর আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজযাত্রার সাক্ষী হবো। নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা।
মিনায় অবস্থান নেওয়ার আগে রবিবার বিকেলে মুসল্লিরা মক্কায় কাবাঘর তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন। আজ সোমবার সারা দিন ও সারা রাত অবস্থানের মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সেখানে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর মেহমানরা ইবাদত বন্দিগিতে মশগুল থাকবেন।
এরপর ফজরসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পর তারা যাবেন মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানের দিকে। আরাফাতে যাওয়ার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে মুসল্লিরা পায়ে হেঁটে, হুইল চেয়ারে, বাসে- যে যেভাবে পারেন পৌঁছাবেন। সবার শরীর সাদা কাপড়ে ঢাকা থাকবে। তাদের “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক” ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের ময়দান।
৯ জিলহজ হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে আরাফাত ময়দানে অংশগ্রহণ। মিনা থেকে এসে হাজিরা এখানে খুতবা শোনার পর একই সঙ্গে জোহর ও আসরের নামাজ সংক্ষিপ্তভাবে আদায় করবেন। হজ কবুল হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া ও কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে সূর্যাস্তের অপেক্ষা করবেন। ১০ জিলহজ সূর্যাস্তের পর হাজিরা মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাতের ময়দান থেকে রওনা দেবেন মুজদালিফার দিকে। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন তারা। এখানে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করবেন।
তারপর মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন। এরপর ফজরের নামাজ শেষে হাজিরা আবার ফিরবেন মিনায়। পরদিন সকালে জামারাতে পাথর নিক্ষেপ ও পশু কোরবানির পর পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম ত্যাগ করবেন। পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ করে হজের পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন হাজিরা।
ইসলামের মূল ৫টি স্তম্ভের মধ্যে হজ পঞ্চম স্তম্ভ। হিজরি বর্ষপঞ্জির জ্বিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ হজ পালনের জন্য নির্ধারিত সময়। ইসলাম ধর্মমতে, শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ।