কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা : ঢাকার কেরানীগঞ্জে ডাকাত সর্দার কসাই কামালসহ শুক্রবার দলের ৩ সদস্যকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায় চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রুহিতপুর রামেরকান্দা রােড, মেকাইল-অগ্রখােলা, বেলনা, শুটকিটেক, কলাতিয়া, চেয়ারম্যান সালাম সড়কসহ বিভিন্ন নির্জন রাস্তায় রাতের আধারে ডাকাতি করতো। দুর্ধর্ষ ডাকাত দলটি রাস্তায় গাছ ফেলে মােটর সাইকেল, সিএনজি, অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ আরহী এবং পথচারীদের সর্বস্ব লুটে নিত। যাত্রীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে তাদের পোশাক খুলে তাদেরকে বেধে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে নিয়ে ফেলে তাদের নগদ টাকা, মােবাইল ফোন, ঘড়ি, মােটর সাইকেল সব লুট করে নিয়ে পালিয়ে যেত।
ডাকাতরা গত কিছুদিন ধরে বিশেষ করে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উল্লেখিত এলাকাগুলােতে ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের ডাকাতি করে আসছিল ।
দু’জন ভুক্তভোগী কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় অভিযােগ দায়ের করলে দুটি ডাকাতি মামলা রুজু হয়। এর একটি মামলার ঘটনাস্থল রামেরকান্দা অপর ঘটনাস্থল কলাতিয়া বেলনা এলাকায় সংঘটিত হয় বলে জানা যায়। মামলা রুজুর সাথে সাথেই কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ সর্বাত্মক তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য সােহান ওরফে শাওন হাওলাদারকে (২৮) তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন নেকরােজবাগ এলাকা থেকে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে শাওন সবকিছু স্বীকার করে এবং তার দেয়া তথ্যমতে ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য আসাদুল আকনকে (নয়ন) (২৭) জিনজিরা ঘাট এলাকা থেকে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন এবং শাওন উভয়ই পুলিশকে জানায় যে, কামাল বেপারী ওরফে কসাই কামাল তাদের দলের নেতা এবং সকল ডাকাতির ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। কামাল তাদেরকে অস্ত্র, টাকা ও পিকআপের যােগান দেয় এবং ডাকাতির মালামাল বিক্রি শেষে সবাইকে ভাগ বাটোয়ারা করে দেয়।
তদন্তের এপর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ সার্কেলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে একটি চৌকশ দল ডাকাত কামালকে জিনজিরা ঘাট এলাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যমতে তার রসুলপুর ভাড়া বাসা হইতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। আটককৃত ৩ ডাকাতের নামে পূর্বে অনেক ডাকাতির মামলা আছে বলে তদন্তকালে জানা যায় ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জিয়াউদ্দিন জিয়া জানান, আটককৃত ডাকাতরা জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে এবং তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতদলের অন্যান্য সদস্যদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দিন কবির জানান, এই ডাকাত দলটি কেরানীগঞ্জবাসীর রাতের চলাচলের ক্ষেত্রে রীতিমত আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমরা তথ্য-প্রযুক্তির সাহায়তায় ৩ জনকে ধরতে পেরেছি। অভিযান অব্যাহত আছে এবং অচিরেই অন্যান্যদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। আসামিদের আটকের ফলে কেরানীগঞ্জে জনসাধারণের রাত্রিকালীন চলাচল অধিকতর নিরাপদ হবে বলেও আশাবাদ এ কর্মকর্তার।