বিনোদন নিউজ : শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) দেশব্যাপী মুক্তি পেয়েছে পারিবারিক গল্পের সিনেমা ‘মৃধা বনাম মৃধা’। রায়হান খানের গল্প ও চিত্রনাট্যে সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন রনি ভৌমিক। মুক্তির পর থেকেই দর্শকমহলে দারুণ প্রশংসা পাচ্ছে এটি।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শ্যামলী সিনেমা হলে দর্শকদের সঙ্গে বসে সিনেমাটি দেখেন ছবিটির কলাকুশলী তারিক আনাম খান, সিয়াম আহমেদ, নোভা ফিরোজ, পরিচালক রনি ভৌমিক ও চিত্রনাট্যকার রায়হান খান।
সিনেমা মুক্তির পর কলাকুশলীরা হল পরিদর্শন করেন, এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্ত ‘মৃধা বনাম মৃধা’ ছবির নির্মাতা আজ ছবিটি দেখাতে নিয়ে এসেছেন তার পুরো টিমকে অর্থাৎ প্রোডাকশন বয়, লাইট, ক্যামেরা ক্রু, এডি, আর্ট, সাউন্ডসহ এই টিমের সবাইকে এবং তাদের পরিবারগুলোকে। যেটা সচরাচর দেখা যায় না।
নির্মাতা বলেন, আমরা তো শিল্পীদের নিয়ে দেখেছিই কিন্তু আমি চেয়েছি এই কাজটার সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রত্যেককে নিয়ে দেখতে, তাদেরকে আমি ছবিটা দেখাতে চেয়েছি। ছবিটি করার সময় যে ছেলেটা আমাকে চা এনে দিয়েছে, সেই প্রোডাকশন বয়টাও কিন্তু আমার টিমের সদস্য। সে যদি আমাকে চা না খাওয়াতো তাহলে আমি আমার কাজটা ঠিকমত নাও করতে পারতাম! লাইটের ছেলেটা যদি ঠিকমতো লাইট না করতো তাহলে আমার কাজটা ঠিকমত নাও হতে পারতো!
তিনি আরও বলেন, শুধু আমার কেন, অন্য কোন প্রোডাকশনের ছেলেটা কিন্ত অনেক টাকা খরচ করে ছবিটা দেখতে যেতে পারে না। তারও ইচ্ছে করে ছবি দেখার কিন্ত সামর্থ্যের কারণে অনেকেই সেটা পারে না। আর তাই আমি চেয়েছি আমার টিমের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটা সদস্যকে ছবিটা দেখাতে। শুধু তাই নয়, যারা আজকে ছবিটা দেখতে এসেছেন তারা প্রত্যেকে তাদের বাবা কিংবা মা বা পরিবার নিয়ে ছবিটি দেখতে এসেছে। যাদের কারণে আমার কাজটা ঠিকঠাক মতো করতে পেরেছি আমি চেয়েছি সবাইকে নিয়ে ছবিটি দেখতে। তাদের পরিবারকেও সেটা দেখাতে চেয়েছি, আর কিছু না।
সিয়াম আহমেদ বলেন, যাদের জন্য এবং যাদেরকে নিয়ে ছবিটা করতে পেরেছি তাদের সঙ্গে বসে দেখতে পেরে খুব ভালো লেগেছে। তাদের সবার পরিশ্রম এবং কষ্ট শেষে আজকে তৃপ্তির হাসি দেখতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ।
নোভা ফিরোজ বলেন, আমি আমার পুরো পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে সিনেমাটি দেখতে এসেছি। তাদের সঙ্গে আমাদের টিমের সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রত্যেককে সাথে নিয়ে কাজটি দেখতে চেয়েছি আমরা। সবাইকে সাথে নিয়ে ছবিটি দেখতে পেরে, সবাইকে দেখাতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
নিজের মেয়েকে নিয়ে সিনেমা দেখতে আসা প্রোডাকশন ম্যানেজার রুস্তম বলেন, কাজ শেষে আমাদের সিনেমা দেখা হয়না সত্যি। কিন্ত এ কাজটা দেখার পর নিজের চোখকে কন্ট্রোল করতে পারিনি।
তার মেয়ে অশ্রুসিক্ত অবস্থায় বলেন, আমার বাবা এই মিডিয়াতে কাজ করছেন ৩৫ বছর। এই ছবিটা দেখার পর আমি কি ফিল করেছি বুঝাতে পারবো না। আমার বাবার কাজ করা বাবার গল্পের এ সিনেমা দেখে আমি মুগ্ধ। এমন সিনেমা আরও অনেক বেশি বেশি হোক।
সিনেমা দেখতে আসা চল্লিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বলেন, পরিবার নিয়ে দেখার মত সিনেমা এখন হয় না বললেই চলে। কতদিন পর এমন ছবি দেখতে পেরেছি আমি জানি না। তবে বাবা ছেলের গল্প এবং তাদের অনুভূতি আমাকেও নাড়া দিয়েছে। আমি আগামী সপ্তাহেই আমার ছেলেকে নিয়ে পারসোনালি ঘুরতে যাব, এটুক বলতে পারি।
আরেকজন দর্শক বলেন, আমার বাবার সাথে সম্পর্ক খুব একটা ভালো না। এই ছবিটা দেখার পর থেকে ইচ্ছে হচ্ছে আমার বাবাকে এখনই একটা ফোন দিতে। হল থেকে বের হয়েই বাবার সাথে কথা বলবো আমি।
টফি নিবেদিত এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, সিয়াম আহমেদ ও নোভা ফিরোজ, সানজিদা প্রীতি, নিমা রহমান, তৌফিকুল ইমন, রিন্টু ও মিলন ভট্টাচার্য প্রমুখ।