নিজস্ব সংবাদদাতা : ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশিদের শরণার্থী শিবিরে থাকার কষ্ট শিখিয়েছে উল্লেখ করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদেরকে সেই মানবেতর অবস্থায় রাখতে চাই না। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী ভাসানচরে তাদেরকে জায়গা করে দিয়েছেন।’
‘যতদিনই তারা এখানে থাকেন না কেন, মানুষের মতো যাতে থাকতে পারেন। আর বাংলাদেশকে যেন সারাবিশ্ব বলতে পারে অতিথিদেরকে, উদ্বাস্তুদেরকে কী মর্যাদায় রাখতে হয়, সেই মর্যাদায় তারা রাখতে জানে। সেজন্যই ভাসানচর তৈরি করা হয়েছে’, বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রোববার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ডেভেলপমেন্ট প্লানিং এক্সপেরিয়েন্সেস ইন বাংলাদেশ (ফ্লোয়িং অ্যা প্ল্যানড পথ অব গ্রোথ উইথ অ্যা ভিশন)’ শীর্ষক এক সেমিনারে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা কিন্তু উদ্বাস্তু। তারা বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা নন। তাদেরকে নিজ দেশে (মিয়ানমারে) ফিরে যেতে হবে। তারা ফিরে যাবে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধাগুলো যেন এই রোহিঙ্গারা পান। তারা যেন রেডি টু মুভ (ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত) থাকে, তাদের যা যা প্রয়োজন সেটাও যেন পায়। এটা কিন্তু কেউ করে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটা করেছেন। আপনারা যদি শরণার্থী, উদ্বাস্তুদের ইতিহাস দেখেন- তারা ক্যাম্পে বসবাস করেন, মানবেতর জীবনযাপন করেন। আজকে প্রধানমন্ত্রী সেই ধারণার পরিবর্তন করে দিয়েছেন।’
যেখানে বেসরকারি খাতের অবদানই নেই, তারা যেখানে লাভজনকভাবে ব্যবসা করতে পারবে না, সেসব জায়গায় সরকার আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্টোরেজ ও হোল্ডিং এক জিনিস নয় উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, ‘ধরেন, একজন কৃষকের তিন বিঘা জমি আছে। তিনি চাষ করে ধান পেলেন ১৫ মণ। তিনি প্রথমে হিসাব করেন, তার আরেকটা ফসল পাওয়ার আগ পর্যন্ত তার কতটুকু চাল লাগবে। সেই চালটা ১৫ মণ থেকে বাদ দেন। তারপর যা থাকে, সেটা বিক্রি করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও অন্যান্য বাজারের কাজ করেন। যেটুকু বেচলেন না, সেটা কৃষকের স্টোরেজ। আর অনেকেই আছেন, হোল্ডিং করেন। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না করে একটা পণ্যের দাম বাড়ানোর জন্য ম্যানিপুলেট করেন। সেটা কিন্তু হোল্ডিং। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, সরকার মূলত লাভ করার জন্য ব্যবসা করে না। সরকার জনগণের কষ্ট লাঘব করার জন্য যেখানে মার্কেটে ইন্টারফেয়ার করা প্রয়োজন, সেটা করার জন্য সরকারের কিছু প্রতিষ্ঠান আছে।’
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম। এছাড়াও সেমিনারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন।