ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তদের বাড়িতে লাল পতাকা প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমন, মৃত্যু ও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৭ দিনের কঠোর লকডাউনের রবিবার (৩০ মে) ৬ষ্ঠ দিন চলছে। কঠোর লকডাউন চলাকালেই শুক্রবার (২৮ মে) জেলায় ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়েছে ৭ জনের দেহে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের বাড়িতে বাড়িতে লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলা শহরের নিমতলা মোড়ের একটি বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, দুটি লাল পতাকা ঝুলানো রয়েছে। এই বাড়ি ছাড়াও জেলার আরও ৬টি বাড়িতে এমন করে পতাকা দিয়ে বাড়িগুলো কঠোরভাবে লকডাউনের আওতায় নিয়ে আনা হয়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব-আল-রাব্বী জানান, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের বাড়ি খুঁজে খুঁজে গিয়ে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। পতাকা দেয়ার পাশাপাশি কঠোর নজরদারিতে রাখা হচ্ছে এসব বাড়ি। আশেপাশের প্রতিবেশীদের সাথে যাতে কোনভাবে মিশতে না পারে এবং ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেব্যাপারে যথাযথ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পরীক্ষার জন্য ঢাকায় ৪২ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৭ জনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া ফলাফল ও তালিকা দেখে ৭ জনের বাড়িতে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। এছাড়াও বাকি ৩৫ জনের বাড়িতে গিয়ে তাদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত হওয়া ৭ জনের আবারও নমুনা সংগ্রহ করা হব। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট যেহেতু অত্যান্ত শক্তিশালী, তাই এব্যাপারে সকলকে খুব সচেতন হতে হবে। সকলে মিলে দায়িত্বশীল আচরণ করলে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলেও জানান তিনি। এদিকে জেলা শহরের পাশাপাশি মফস্বলেও কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকরে শনিবার মাঠে তৎপর রয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা ও সদস্যরা। জেলা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এবং জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রশাসনের তৎপরতা দেখা গেছে। লকডাউনে দূরপাল্লার ও আন্তঃজেলা বাস ও ট্রেনসহ যানবাহন বন্ধ রয়েছে। মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানায়, জেলায় সনাক্ত হওয়া ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বহনকারী ৭ জনের মধ্যে ৫ জনই সদর উপজেলার। বাকি ২ জন শিবগঞ্জ উপজেলার। তাদের মধ্যে ৫ জন পুরুষ ও ২ জন নারী রয়েছে। ২ নারীর একজন শিবগঞ্জের আরেকজন সদর উপজেলার। চাঁপাইনবাবগঞ্জে রবিবার (২৯ মে) রাত ১০টা পর্যন্ত করোনা সনাক্ত হয়েছে ১৭২৭ জনের। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৫৭৬ জন। এখন পর্যন্ত জেলায় ৩২ জন করোনা রোগী নিহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘন্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার ৫৭ শতাংশ।