শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০০ পূর্বাহ্ন

নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগ মূহুর্ত্তে বাগেরহাটে ইলিশ ক্রয়ে উপচেপড়া ভীড়

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২২ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য আজ শুক্রবার রাত ১২ টার পর (০৪ অক্টোবর) থেকে সাগর ও নদীতে ২২ দিনের জন্য ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা ট্রলার নিয়ে উপকূলে ফিরেছেন। আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে মিলিয়ে এসময়ে ইলিশের ডিম ছাড়ার উপযুক্ত সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নদীতে ছুটে আসে। তাই প্রতিবছরের মতো এ বছরও মোট ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য এ সময় ইলিশ ক্রয় বিক্রয়, বিপণন ও পরিবহন নিষিদ্ধ থাকবে।

এদিকে শেষ দিনে ইলিশ কিনতে বাগেরহাটের একমাত্র সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র কেবি মাছ বাজারে ভিড় জমিয়েছেন ক্রেতারা। তবে দাম চড়া হওয়ায় তারা হতাশা।
এদিন ভোর থেকেই ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয় কেবি বাজারে। ফজরের নামাজ শেষে মুহ‚র্তের মধ্যে ক্রেতা-বিক্রেতার হাক ডাকে সরগরম হয়ে ওঠে দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম এ মৎস্য আড়ৎ। অন্যান্য সময়ের থেকে খুচরো ক্রেতাদের যেমন ভিড় ছিল, তেমনি মাছের দাম ছিল অনেক বেশি। প্রতি কেজি মাছ অন্যান্য দিনের তুলনায় ১শ’ থেকে ৩শ’ টাকা বেশি বিক্রি হয়েছে। এক কেজি থেকে ১২শ’ গ্রাম মাছ ১৮’শ থেকে ২২শ’ টাকা কেজি, ৮শ’ থেকে ৯শ’ গ্রামের ১৫শ’ টাকা, আধা কেজি ওজনের মাছ এক হাজার, ৩শ’ থেকে ৪’শ গ্রামের দাম ৮শ’ থেকে ৭শ’ টাক। সর্বশেষ ২শ’ গ্রাম ও তার নিচের মাছ বিক্রি হয়েছে সাড়ে চারশো থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা কেজিতে। যা অন্যান্য সময় বিক্রি হত ২শ’ থেকে ৩০০ টাকা কেজি।

শুধু ইলিশ নয় অন্যান্য মাছের দামও ছিল বেশি। ঢেলা চেলা, চাপিলা, তুলার ডাটি, রূপচাঁদা, কঙ্কণ, মেদ, মোচন গাগড়া, সাগরের বাইলা, লইট্টাসহ সব ধরণের মাছ বিক্রি হয়েছে বেশি দামে। সাগরে কাঙ্ক্ষিত মাছ না পাওয়া, ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় মাছের পরিমাণ কম হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে দাবি ট্রলার মালিকদের।

ট্রলার মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার থেকে সাগরে অবরোধ শুরু। এবার তেমন মাছ পাইনি। তারওপর সাগর উত্তাল হওয়ায় মাছ না ধরেই অনেক ট্রলার শুণ্য হাতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে। তাই যা পেয়েছি তা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বেশি দামে বিক্রির পরেও খরচ উঠবে কিনা বলা যাচ্ছে না।’

সাগর থেকে ফেরা জেলে রফিকুল আমানি বলেন, সাগরে যাওয়ার পর থেকে কয়েকবার ঝড়ের কবলে পড়ে জাল ফেলতে পারিনি। তারপরও যে কয়বার ফেলেছি তেমন মাছ পাইনি। আবার কাল থেকে ২২ দিনের অবরোধ এ ভাবেই চলে আমাদের।

মাছ ক্রেতা নারায়ন বিশ্বাস ও জহিরুল ইসলাম মিঠু বলেন, মাইকিংয়ের মাধ্যমে শুনেছি কাল থেকে ইলিশ বিক্রয় বন্ধ। তাই ভোরেই মাছ কিনতে এসেছি। ভেবেছিলাম দাম কম হবে। আগে পোন হিসেবে মাছ বিক্রি হত, আজকে হচ্ছে কেজি হিসেবে। তাও দাম অনেক বেশি।

সিরাজুল ইসলাম নামের এক পাইকারি ক্রেতা বলেন, সপ্তাহে দুই-তিন দিন এখান থেকে মাছ কিনে কচুয়া, বাধাল, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন স্থানে খুচরা বিক্রি করি। আজকে যে দামে মাছ কিনলাম তাতে খুচরো ক্রেতাদের কাছে বিক্রি খুব কষ্ট হবে।

কেবি বাজার মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সভাপতি শেখ আবেদ আলী বলেন, শেষ সময়ে সবাই চাচ্ছে মাছ কিনতে, তাই দাম বেশি। জেলে ও ব্যবসায়ীরাও চাচ্ছে তাদের মাছ বিক্রি করে চলে যেতে। তবে কেউ কেউ আরও বেশি দামে বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছে। তবে রাতের আগেই সব বিক্রি হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো: আবুল কালাম আজাদ বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় ৩ অক্টোবর দিনগত রাত থেকে থেকে ২২ দিনের জন্য সমুদ্র ও নদীতে ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে আমরা প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি। অবরোধ কার্যকর করতে দিন-রাত সব সময় আমাদের টহল জোরদার থাকবে। এ সময়ে জেলেদেরকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com