তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা প্রার্থীরা কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট প্রার্থনার মধ্য দিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। এদিকে সাংসদ প্রতিনিধি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জননেতা লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে ভোটের মাঠে প্রচারণায় নেমেছে এতে নৌকার পালে হাওয়া লাগলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইদুর রহমান প্রায় সর্বহারা হতে চলেছে। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে ত্যাগ করেছে। আবার সরকার দলীয় মেয়র ব্যতিত উন্নয়ন সম্ভব নয় বিষয়টি বুঝতে পেরে সাধারণ মানুষও তার ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে,এতে চরম সঙ্কটে পড়েছে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। ফলে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া তো পরের কথা শেষ পর্যন্ত্য টিকে থাকায় তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে।এদিকে এমপি নির্ভর রাজনীতিতে এমপিবিরোধী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মেয়র করে কোনো লাভ নাই পৌরবাসীর মাঝে এই বোধদয় সৃস্টির পর ভোটের হিসেব পাল্টে গেছে,ভোট গ্রহণের সময় যতো ঘনিয়ে আসছে, ততোই নৌকার পক্ষে সমর্থন বাড়লেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থন জ্যামেতিক হারে হ্রাস পাচ্ছে। জানা গেছে, মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে নৌকাবিরোধী অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নৈশপ্রহরী সাইদুর রহমান নৌকাবিরোধী প্রচারণায় লিপ্ত হয়েছে। তিনি বিজয়ী হতে পারবেন না এটা নিশ্চিত হয়েও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে উদ্দেশ্যে বিজয় নয় বরং যেকোনো মুল্য নৌকার বিজয় ঠেকানো। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছে, এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নৈশপ্রহরীর চ্যালেন্জ করার সামিল। কারণ কাঁকন হাট পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব আব্দুল মজিদ স্বতন্ত্র প্রার্থী, তার মনোনয়ন বৈধ ও বিজয়ের উজ্জ্বল সম্ভনা থাকার পরেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং স্থানীয় সাংসদের সম্মান, দল, নেতা ও নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য শিকার করে সেচ্ছায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে বিরল দৃস্টান্ত স্থাপন করেছে। অন্যদিকে এসব কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে সাইদুর রহমানকে নিয়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়,জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, এলাকায় বইছে মুখরুচোক নানা গুন্জন, প্রতিনিয়ত এসব গুন্জনের ডাল পালা মেলছে এতে তার বিরুদ্ধে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে যেটা ইতিবাচক নয় নেতিবাচক,ফলে প্রতিনিয়ত তার সমর্থন হ্রাস পাচ্ছে। অন্যদিকে পৌরসভার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে, পৌরবাসী বলছে, গত ১০ বছরে মুন্ডুমালা পৌরসভায় মেয়র গোলাম রাব্বানী ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর সাইদুর রহমান পৌরসভায় অনিয়ম- দুর্নীতি ও লুটপাটের যে সামরাজ্য গড়ে তুলেছে সেটা রুপ কথা কেও হার মানায়। স্থানীয়রা জানান, বিগত ১০ বছরে পৌরসভায় দৃশ্যমান তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি তবে, উন্নয়ন তহবিল লুটপাট ও নিয়োগ বানিজ্যে তারা নামে বেনামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিশেষ করে এমপির আস্থাভাজন নেতৃত্ব বা কোনো প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হলে তাদের সামরাজ্যের পতন হবার পাশাপাশি দুদুকের জালে পড়ে তাদের শ্রীঘরেও যেতে হতে পারে। মুলত এমন আশঙ্কা থেকেই তারা নৌকার বিজয় ঠেকাতে ষড়যন্ত্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে নৌকার বিজয় ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠে এবং জামায়াত- বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। প্রসঙ্গত, তানোরের মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করে ১০ জন প্রার্থী মাঠে নামেন। তবে আওয়ামী লীগ থেকে প্যানেল মেয়র আমির হোসেন আমিনকে নৌকার প্রার্থী ঘোষণা করা হয় এবং সাইদুরসহ সকলে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নৌকার বিজয়ে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন বলে ওয়াদা করেন। কিন্ত্ত একদিন পরেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাইদুর রহমান মনোনয়নপত্র দাখিল করে নৌকার সঙ্গে বেঈমানী করেছে। স্থানীয়রা বলছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মনোনিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া মানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া বা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেন্জ করা। কিন্ত্ত একটি কলেজের নৈশপ্রহরী কি করে দেশের সরকার প্রধান ও দলের সভাপতির বিরুদ্ধে এমন অবস্থান নিতে পারে, এর নেপথ্যেই বা রয়েছে কারা ইত্যাদি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তৃণমুলের নেতাকর্মীদের মনে। পৌর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, তারা আশাবাদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এদের ও এদের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবেন যা অন্যদের কাছে অন্যদের কাছে দৃস্টান্ত হয়ে থাকবে। যা দেখে অন্যরা শিক্ষা নিবে নইলে আগামিতে এদের দেখাদেখি অন্যরা উৎসাহী হয়ে উঠবে। তবে সাইদুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা স্থানীয় নির্বাচন এখানে স্বতন্ত্র প্রাথী হতে কোনো বাধা নাই। রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শরীফ খান বলেন, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সাইদুর রহমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেই চ্যালেন্জ করেছে বলে মনে করছে তৃণমুলের নেতাকর্মীরা