রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন

ভারতে ভাইরাল হওয়া বাংলাদেশী নারী নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার ৫

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৮ মে, ২০২১
  • ৩৯৯ বার পঠিত
ভারতে ভাইরাল হওয়া বাংলাদেশী নারী নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার ৫
প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা : ভারতে ভাইরাল হওয়া নারী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত এক বাংলাদেশীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ব্যাঙ্গালুরু পুলিশ। এদের মধ্যে থাকা বাংলাদেশীদের হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ।

কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে শারীরিক ও যৌন নিপীড়ন করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, ২০/২২ বছরের ওই তরুণীকে তিন-চার যুবক নির্যাতন করেন। তাদের সঙ্গে একজন তরুণীও রয়েছেন।

বেঙ্গালুরু পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ভিডিও ক্লিপ দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী মানবপাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে ভারতে এসেছিলেন। এখন তিনি বাংলাদেশে আছেন। তিনি এলে তার বিবৃতি রেকর্ড করা হবে।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ জানান, বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার এক তরুণীকে ভারতের কেরালা রাজ্যে নিয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশেরই রিফাতুল ইসলাম হৃদয় (২৬) নামে এক যুবক জড়িত বলে সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। অভিযুক্ত যুবক রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। গত কয়েকদিন ধরে ভারতে ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওটি আমাদের নজরে আসে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ২০-২২ বছরের একজন তরুণীকে বিবস্ত্র করে ৩/৪ জন যুবক শারীরিক ও বিকৃতভাবে যৌন নির্যাতন করছে। ভিডিওটির একজনের সঙ্গে বাংলাদেশি একটি ছেলের ছবি মিলে যায়। এরপরই এ বিষয়ে আমরা তদন্ত শুরু করি।

তদন্তের একপর্যায়ে জানা যায়, নির্যাতনকারী ওই যুবকের নাম রিফাতুল ইসলাম হৃদয়। সে রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। রিফাতুল ইসলাম হৃদয়ের পরিচয় তার মা ও মামার কাছ থেকে শনাক্ত করা হয়। এলাকায় সে টিকটক হৃদয় নামে পরিচিত।

উপ-কমিশনার বলেন, এ বিষয়ে হৃদয়ের মা ও মামাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা জানান, উশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের কারণে ৪ মাস আগে হৃদয়কে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। বাসার কারো সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই। তদন্তের একপর্যায়ে হৃদয়ের মামার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তার ভারতীয় নম্বরে যোগাযোগ করা হয়। হৃদয় জানায়, গত ৩ মাস আগে সে ভারতে গেছে। যৌন নির্যাতনের যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেই ঘটনা ঘটে ১৫ থেকে ১৬ দিন আগে।

হৃদয় ফোনে তার মামাকে আরও জানায়, ভিকটিম তরুণী বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা। সে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় থাকত। ওই তরুণীর আরও পরিচয় জানতে চাওয়া হলে হৃদয় হোয়াটসঅ্যাপে ভিকটিমের একটি ভারতীয় পরিচয়পত্র আধার কার্ড পাঠায়। যৌন নির্যাতনের ঘটনায় হৃদয় ও তার কয়েকজন বন্ধু জড়িত ছিল। এটি ঘটে ভারতের কেরালায়।

তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ আরও বলেন, হৃদয়ের দেওয়া তথ্যমতে তরুণীর পরিবারের সন্ধান পেয়েছি। তরুণীর পরিবার নিশ্চিত করেছে মেয়েটি তাদের। পরিবারের সঙ্গে মেয়েটির গত দুই বছর ধরে কোনো যোগাযোগ ছিল না।

এদিকে হৃদয়ের বাসা তল্লাশি করে তার জাতীয় পরিচয় পত্র, জেএসসি পরীক্ষার এডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও রমনা থানায় তার নামে দায়ের করা একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার এজাহার ও এফআইআর কপি জব্দ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, হৃদয় জানায় বর্তমানে সে ভারতের পুনেতে অবস্থান করছে। তার প্রকৃত অবস্থান শনাক্তের পাশাপাশি সে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে কি না তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। হৃদয়ের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে যারা যৌন নির্যাতনে অংশগ্রহণ করেছে তাদের পরিচয় শনাক্তকরণের পাশাপাশি তারা বাংলাদেশি নাকি ভারতীয় নাগরিক তা যাচাই-বাছাই চলছে।

অপর এক পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, মেয়েটির স্থায়ী ঠিকানা শনাক্ত করা হয়েছে। তার বাবা-মায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরবর্তীতে তারা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পর আমরা দ্রুত মেয়েটিকে ফেরত এনে চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com