শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৭ অপরাহ্ন

চট্টগ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের কোলাহলে মুখর

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০২২
  • ১৭০ বার পঠিত
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা : ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম মহানগরের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের কোলাহলে বেড়েছে। সবগুলো বিনোদন কেন্দ্রে ভিড় চোখে পড়ার মতো।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকাল থেকে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, পারকী সৈকত, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, কাজীর দেউড়ি শিশুপার্ক, ফয়স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, কর্ণফুলী শিশুপার্কে ছিল শিশু ও অভিভাবকদের ভিড়। যেখানে বসে আড্ডা দিচ্ছেন অনেকে। কেউ বা পছন্দের খাবার তুলে দিচ্ছেন প্রিয়জনের মুখে। যে যার মতো আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন বিনোদনপ্রেমীরা।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত মুখর হয়ে উঠে হাজারো মানুষের মিলনমেলায়। কেউ মেতে ওঠেন সমুদ্র স্নানে, অনেকে চড়েন বোটে, কেউ কেউ ঘোড়ার পিঠে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার আর বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান সৈকতে।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই সৈকতে মানুষের সমাগম বেড়ে যায়। এ ছাড়াও মেরিন ড্রাইভ সড়কও ছিল মানুষে ঠাসা। মোটরসাইকেল নিয়ে সৈকতে প্রবেশ না করে সড়কের পাশে সমুদ্র তীরে বসে গল্প-আড্ডা দিতে দেখা গেছে কাউকে কাউকে।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে আসা আজাদ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ব্যস্ততার কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তেমন কোথাও যাওয়া হয়ে ওঠে না। ঈদের বন্ধে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ছুটে এসেছি। বেশ ভালোই লেগেছে। সময় কাটানোর জন্য অনেক ভালো স্থান এটি।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. ইস্রাফিল মজুমদার জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় ঈদের ছুটিতে এবার ২৫-৩০ হাজার দর্শনার্থী এসেছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় সতর্ক আছি। সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ। সিএমপির টিমও আমাদের সহায়তা করেছে।
তিনি বলেন, মানুষের ভিড়ে মায়ের সঙ্গে বেড়াতে আসা তিনটি বাচ্চা হারিয়ে গিয়েছিল। তাদের খুঁজে দিয়েছি। তবে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত পারকি সমুদ্র সৈকতেও বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ভিড় করে। মঙ্গলবার সকাল থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী আসতে থাকেন। এখানকার দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় ছিল স্থানীয় থানা পুলিশ।
নগরীর ফয়স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও সি-ওয়াল্ডেও ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। সোমবার সকাল থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল। এখানে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা লেকে নৌকা নিয়ে ভ্রমণ, কেউ সুবিশাল সুইমিং পুলে নেমে পানিতে গা-ভাসাতে দেখা গেছে। সুইমিং পুলে নেমে অনেকেই গানের তালে তালে নাচতেও দেখা যায়।
কনকর্ড ফয়স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ডেপুটি ম্যানেজার (মার্কেটিং) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, এবার আবহাওয়া ভালো হওয়ায় শুরু থেকে দর্শনার্থীর ভিড় ছিল। মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকাল থেকেও ৬ হাজার দর্শনার্থী পার্কে এসেছে। আমরা যা আশা করেছিলাম তার চেয়েও বেশি দর্শনার্থী এসেছে একদিনে।
তিনি বলেন, এখানে থাকা সবগুলো বোট সচল রয়েছে। এ কারণে লেকে ভ্রমণেও কোনও সমস্যা হয়নি। এখানে রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। আশা করছি আরও কয়দিন থাকবে ঈদের আমেজ। আর স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আমরা অনেক কঠোর। তবে পর্যটকরা অনেকে উদাসীন।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, ঈদের দিন ১৪ হাজারের মতো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেছেন। সোমবার প্রায় ১৫ হাজার দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেও মানুষের উপচে পড়া ভিড় জমেছে।
তিনি বলেন, দিন দিন পর্যটক বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে আমরা পর্যটকদের সতর্ক করছি। মাস্ক পরতে অনুরোধ করছি।
চট্টগ্রাম শিশু পার্কের জেনারেল ম্যানেজার নাছির উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। অনেকে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ছিল তারা শহরে আসছেন। যার কারণে পর্যটকদের সংখ্যাও বাড়ছে। মাস্ক ছাড়া কোনো দর্শনার্থীকে প্রবেশ করতে দিচ্ছি না। স্বাস্থ্যবিধি পালনে আমরা কঠোর।
সিআরবিতে ঘুরতে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ফরহাদ মাহফুজ বলেন, করোনার কারণে স্থবির ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলো। মানুষ ঘর থেকে বের হয়নি। এখন মানুষ একটু সুযোগ পেয়েছে। তাই ঈদের ছুটির দিনগুলোতে ঘুরতে আসছে। আমিও মা বাবাকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com